বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫২ পূর্বাহ্ন
পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি : পটুয়াখালী সদর উপজেলার মরিচবুনিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের বরুনবাড়িয়া গ্রামে একাধিক বার যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূর উপরে অমানুষিক নিষ্ঠুর নির্যাতন ও মেরে ফেলার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে মোসাঃ জাহিদা আক্তার (৩০) এর স্বামী তরিকুল ইসলাম খোকন (৩৮) নামে।দুই সন্তানের জননী জাহিদা বর্তমানে অসহায় ও মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন,২০০১ ইং সালে শরিয়ত মোতাবেক স্বামী খোকনের সাথে বিয়ে হয়। ১৮ বছরে সংসারে আমাদের দুটি সন্তান রয়েছে।ইসরাত জাহান আদুরী(১৩) ও রিদওয়ানুল ইসলাম রাইয়্যান(৫)।
বিয়ের পর শ্বশুরিবাড়ির লোকজনের একাধিক বার যৌতুকের দাবি পুরন করাতে বাবার বাড়ি থেকে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা এনে দেয়ার পরও থেমে থাকেনি তাদের অমানুষিক নির্যাতন। এছাড়া ও ২০১৪ ইং সালে স্বামী খোকন কোম্পানির চাকুরির কথা বলে নগত ২,০০,০০ লক্ষ টাকা নেয়। এরপর থেকে সে বিভিন্ন সময় বাড়ির বাহিরে থাকতো আমি তার বড় ভাই ভাবীর নির্যাতনের কারনে অধিকাংশ সময়ে বাবার বাড়ি থাকতাম। হঠাৎ গোপনে সূএে জানতে পারি চাকুরির স্থান ঝালকাঠি, রাজাপুরে তহামিনা রহমান (তাম্মি) নামে এক নারীকে গোপনে বিয়ে করেছে, সেও বিবাহিত এবং তার ঘরেও ১টি সন্তান রয়েছে। আমি এই কথা খোকনের কাছে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে এবং আমার সন্তানদের ঠিকমত ভরন পোষন দিতনা।
গত ১০/০৮/১৯ ইং তারিখ শশুর বাড়ির লোকজন আমাকে হাত-পা বেঁধে শারিরীক নির্যাতন করে বিষক্রিয়া দিয়ে মেরে ফেলার চেস্টা করে। এনিয়ে ১৬/০৮/১৯ ইং পটুয়াখালী সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করি মামলা নং-৩৭ যাহা নারী ও শিশু দমন আইন সংশোধনীয় ২০০০,ধারা- ১১-(ক)-৩০ এ রুজু করা হয়। মামলার আসামি, ১. তরিকুল ইসলাম খোকন(৩৮), ২. স্বপন তালুকদার(৪৫), ৩. মাহবুব তালুকদার (২৫),উভয় পিতাঃ মৃত আব্দুল গনি তালুকদার, ৪. সেতারা বেগম (৪০), স্বামীঃ স্বপন তালুকদার(৪৫), ৫. ফয়সাল তালুকদা, পিতাঃ স্বপন তালুকদার। মামলাটি বর্তমানে আদালতে চলমান রয়েছে। ২ নং আসামি জেল হাজতে তবে চার্জসিট থেকে ১ নং আসামি ছাড়া সকল আসামিদের বাদ দেয়া হয়েছে। কেন কিভাবে আসামিরা মামলা থেকে অব্যহতি পেয়ে যাচ্ছে এই প্রশ্নের উত্তর খুজতে আইনের দরজায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বাদী জাহিদা আক্তার।
এবিষয়ে মামলার তদন্ত ও চার্জসিট প্রদানকারী সদর থানার এস,আই আমিনুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আমি তদন্ত করে যে আলামত ও মেডিকেল রিপোর্ট পেয়েছি তার উপরে ভিত্তি করে এবং আমার উর্ধতন কর্মকর্তার অনুমোতিতে দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে এই চার্জসিট দাখিল করেছি।
অথচ বাদীর অভিযোগ ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে পুলিশ ও সাংবাদিকের সহযোগিতায় ঘটনার দিন আমাকে মুমুর্ষ অবস্থায় আসামিদের নিজ গৃহ থেকে উদ্ধার করে। পটুয়াখালী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্মরত চিকিৎসক ডাঃ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের তত্বাবধানে আমার চিকিৎসা সম্পুর্ন হয় তখন আমি অজ্ঞান ছিলাম আমাকে জোর পুর্বক বিষক্রীয়া পান করানো হয়েছিল অথচ মামলার চার্জসিট তাহার কোন আলামত উল্লেখ নেই। মেডিকেল রিপোর্ট দেখিনি মামলার আয়ু বলেন সেখানে সিম্পল ফিজিক্যাল এসেল্ট উল্লেখ রয়েছে। আরে লেখা আছে মামলা অনুযায়ী আসামিদের সাথে কোন অপরাধের সম্পৃক্ততার আলামত পাওয়া যায়নি। এজন্য ২-৫ নং আসামিদের নাম বাতিল করা হয়।
সরোজমিনে অনুসন্ধানে গেলে,মামলা অনুযায়ী ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে,স্থানীয় প্রতিবেশীরা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলেন,বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য প্রায় প্রায় জাহিদার উপরে অত্যাচার করত,স্বামী খোকন,বড় ভাই স্বপন ও ভাবি সেতারা। ঘটনার দিন তারা জাহিদাকে মেরে ফেলার চেস্টা করে।মুমুর্ষ দেখে সবাই ভেবেই নিয়ে ছিলো জাহিদা আর বেচে নেই। পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে ।
এ বিষয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ কয়েক বার মিমাংশার চেস্টা করে। পরবর্তীতে গত ১০/০৮/১৯ ইং তারিখ আসামিরা স্বপরিবারে উক্ত ঘটনা ঘটায়। একই বাড়িতে ১ নং আসামি খোকনের আপন চাচা হাচান তালুকদার বলেন,বিগত দিনে আমার জানামতেই জাহিদার কাছ থেকে ৬০,০০০ হাজার টাকা নেয়া হয়,শুনেছি এভাবে আরো টাকা দেয়া হয়েছে তবে উক্ত ঘটনার দিন আমি বাড়িতে ছিলাম না। বলে জানায় । উক্ত বিষয়টি আইনের আওতায় আনা একান্তই আবশ্যক বলে জানান বিবাদীর চাচা হাসান তালুকদার।
নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের প্রতি সহিংসতা দমন করতে বিদ্যমান আইনকে, আরো শক্ত ও মজবুত করতে হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আইনের দুর্বলতা এবং বিচারিক দীর্ঘসুত্রতা আপরাধীদের পার পেতে সাহায্য করছে, শাস্তির ভয় কম থাকায় অপরাধীরা নতুন অপরাধে উৎসাহ পাচ্ছে। নৈতিক শিক্ষার প্রসার কঠোর আইন প্রনয়োন দ্রুত বিচার আদালতের মাধ্যমে অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
এ বিষয়ে জাহিদার প্রানের দাবী সকল আসামীদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেয়াহোক,
যাতে আর কোন নারীর জীবন এভাবে ধংশ না হয়। তিনি আরো বলেন মামলাটি পূর্ন তদন্ত করা হোক। মামলাটি আগামী ০১ অক্টোবর ১৯ ইং তারিখ শুনানীর দিন ধার্য আছে।